অর্শ বা পাইলস রোগ এবং হোমিওপ্যাথি। এটি মলদ্বারের একটি জটিল রোগ। এ রোগে মলদ্বারের ভেতরে বা বাইরে, চারপাশে/ একপাশে, একটি/ একাধিক, গোলাকৃতি/ সুচাল দেখায়।
অর্শ বা পাইলস রোগ এবং হোমিওপ্যাথি।
অর্শঃ
এটি মলদ্বারের একটি জটিল রোগ। এ রোগে মলদ্বারের ভেতরে বা বাইরে, চারপাশে বা একপাশে, একটি বা একাধিক, গোলাকৃতি বা সুচাল গুটিকা দেখা দেয়। এ গুটিকাগুলোকে 'বলি' বা 'গেজ' বলা হয়। পায়খানা করার সময় এ বলিগুলো থেকে অভ্যন্তরীণ সমস্যার অনুপাতে কারো অধিক পরিমাণে, কারো স্বল্প পরিমাণে রক্ত যায়। আবার অনেকের রক্ত যায়ই না।
![]() |
অর্শ বা পাইলস রোগ এবং হোমিওপ্যাথি। |
অর্শ বা পাইলস রোগের সৃষ্টির ইতিবৃত্তঃ
প্রতিনিয়ত আবহাওয়া ও খাদ্যাদি থেকে নানা রকম বিষ ও রোগ জীবাণু আমাদের দেহের ভেতরে প্রবেশ করে। শক্তিশালী জীবনীশক্তি এ বিষসমূহের কিছু দেহাভ্যন্তরে ধ্বংস করে ও কিছু পায়খানা প্রস্রাব ও ঘর্ম ইত্যাদি স্বাভাবিক স্রাবের মাধ্যমে বাইরে বের করে দিয়ে দেহকে সুস্থ রাখে। এমন কিছু জীবাণু আছে যেগুলোকে জীবনীশক্তি ধ্বংস করতে পারে না এবং নিষ্কাশিত করাও জীবনীশক্তির সামর্থ্য হয় না। সে জীবাণুগুলো দেহের মধ্যকার ত্রিদোষ (সোরা, সিফিলিস, সাইকোসিস)-এর যে কোনো দোষ বা দোষসমূহের দ্বারা প্রবল শক্তি অর্জন করে এবং মারাত্মক ব্যধির সৃষ্টি করে জীবনীশক্তির পতন ঘটানোর চেষ্টা করে। এ অবস্থায় জীবনীশক্তি যে কোনো স্রাবকারী নতুন পথের সৃষ্টি করে ওই প্রবল বিষ বা বিষবাষ্প বের করে যন্ত্রটিকে রক্ষা করার চেষ্টা করে।
অর্শ বা পাইলস রোগের কারণঃ
- পুরনো কোষ্ঠকাঠিন্য।
- লিভার সিরোসিস, যকৃতে অতিরিক্ত রক্ত সঞ্চয় ও অত্যধিক মস্তিষ্কের কাজ।
- মূত্রাশয়ের গোলযোগ, প্রোস্টেট ক্যান্সার, গর্ভাবস্থায় মহিলাদের জরায়ুতে চাপ পড়লে।
আকৃতি অনুযায়ী প্রকারভেদ :
- ছোলার মতো,
- আঙুরের মতো,
- খেজুর গাছের শিকড়ের মতো,
- রেশন গাছের গোটার মতো,
- খেজুরের মতো,
- ডুমুরের মতো।
শিরা স্ফীতির ওপর প্রকারভেদ যথাঃ
১. মলদ্বারের অভ্যন্তরে অর্শ : ১-২ ইঞ্চি ভেতরের দিকে শিরার স্ফীতি হয়ে বলির সৃষ্টি হয়। একে আবার ৩ ভাগে ভাগ করা যায়।
- ক. প্রথমতঃ মলদ্বারের ভেতর থেকে ব্যথাহীন রক্তপাত হয়। কিন্তু অর্শের বলি মলদ্বারের বাইরে বের হয়ে আসে না।
- খ. দ্বিতীয়তঃ বলি মলদ্বারের বাইরে বের হয়ে আসে, তবে মলত্যাগের পর নিজেই ভেতরে চলে যায়।
- গ. তৃতীয়তঃ বলিগুলো বাইরে বের হয়ে আসে এবং হাত দিয়ে ভেতরে ঢুকিয়ে না দিলে বাইরেই থেকে যায়।
২. মলদ্বারের বাইরে অর্শ : মলদ্বারের বাইরে বলির সৃষ্টি হয় এবং হাত দিয়ে তা অনুভব করা যায় এবং
৩. মিশ্র অর্শ : এক্ষেত্রে মলদ্বারের ভেতরে এবং বাইরে উভয় ক্ষেত্রেই অর্শের বলি পাওয়া যায়।
অর্শ বা পাইলস রোগের লক্ষণসমূহঃ
- পায়খানা করার সময় অত্যধিক বা অল্প পরিমাণে রক্ত যেতে পারে।
- গুহ্য দ্বারে জ্বালাপোড়া এবং ফুলে যায়।
- টাটানি ও যন্ত্রণা।
- কাঁটাবিদ্ধ অনুভূতি।
- মাথা ধরা ও মাথা ভার বোধ।
- উরুদেশ, বক্ষ, নাভির চারপাশে ব্যথা ও মলদ্বারে ভার বোধ।
- কোমর ধরা ও কোষ্ঠবদ্ধতা।
অর্শ বা পাইলস রোগে আক্রান্তদের করণীয়ঃ
- নিয়মিত পায়খানা করা।
- পেটে হজম হতে চায় না এমন খাদ্য বর্জন করা।
- চিকিৎসকের পরামর্শমতো বিশ্রাম নেয়া।
- হাতুরে ডাক্তার বা কবিরাজ দিয়ে চিকিৎসা না করা।
অর্শ বা পাইলস রোগ প্রতিরোধের উপায় :
- কোষ্ঠকাঠিন্য যাতে না হয় সে দিকে খেয়াল রাখা।
- নিয়মিত ঘুমানো।
- পরিমাণ মতো পানি পান করা।
- অতিরিক্ত পরিশ্রম না করা।
- তরল ও সহজপাচ্য খাদ্য গ্রহণ।
- অধিক মশলা জাতীয় খাদ্য পরিহার করা।
অর্শ বা পাইলস রোগের হোমিওপ্যাথি চিকিৎসাঃ
হোমিওপ্যাথি রোগ নিরাময়ের সবচেয়ে জনপ্রিয় একটি চিকিৎসা পদ্ধতি। এ পদ্ধতিতে ব্যক্তি স্বাতন্ত্র ও সদৃশ উপসর্গের উপর ভিত্তি করে চিকিৎসা করা হয়। এটি উপসর্গ ও জটিলতা মুছে ফেলে সম্পূর্ণ স্বাস্থ্য অবস্থায় রোগীর ফিরে যাবার একমাত্র উপায়। সদৃশবিধানের লক্ষ্য শুধু অর্শ বা পাইলস রোগ চিকিৎসা নয়, তার অন্তর্নিহিত কারণ ও স্বতন্ত্র প্রবণতা মোকাবেলায়ও সহায়তা করে। স্বতন্ত্র ঔষধ নির্বাচন এবং চিকিৎসার জন্য, রোগীকে একজন যোগ্যতাসম্পন্ন ও রেজিস্টার্ড হোমিওপ্যাথিক ডাক্তারের সঙ্গে পরামর্শ করা উচিত।
অর্শ বা পাইলস রোগের চিকিৎসার সহায়ক ঔষধগুলো নিম্নরুপঃ
১. অর্শের জ্বালা-যন্ত্রণা গরমে কমলে- আর্সেনিক এল্ব, এসিড নাইট, কলিনসোনিয়া, ল্যাকেসিস, থুজা ইত্যাদি।
২. অর্শের জ্বালা-যন্ত্রণা ঠান্ডায় কমলে- ক্যালি কার্ব, নাক্স ভম, এলো, রাটানহিয়া, সালফার ইত্যাদি।
৩. রক্তস্রাবে কমলে-ইস্কিউলাস হিপ, ল্যাকেসিস।
৪. মলত্যাগের পর অসহ্য যন্ত্রনায়- একোনাইট, ইগ্নেসিয়া, মিউরেটিক এসিড, এসিড নাইট, থুজা ইত্যাদি।
৫. রক্তস্রাবি অর্শে- এসিড নাইট, কলিনসোনিয়া, হেমামেলিস, ইগ্নেসিয়া, মিলিফোলিয়াম, রাটানহিয়া, ক্যাপসিকাম, ফেরাম ফস ইত্যাদি।
৬. কোষ্ঠকাঠিন্যসহ অর্শে- কলিনসোনিয়া, ইস্কিউলাস হিপ, নেট্রাম মিউর, ক্যাল্কেরিয়া ফ্লোর, নাক্স ভম ইত্যাদি।
৭. নরম মলসহ অর্শে- এসিড নাইট, রাটানহিয়া।
৮. মলদ্বারে কাঠি থাকার অনুভূতি- এসিড নাইট, ইস্কিউলাস হিপ, কলিনসোনিয়া, রাটানহিয়া(কাচের টুকরা থাকার অনুভূতি), থুজা।
অর্শ বা পাইলস রোগ অপচিকিৎসার কুফলঃ
জীবনীশক্তি(Vital force) সৃষ্ট এ স্রাবকারী পথকে চিকিৎসা শাস্ত্রবিদরা অর্শ,ভগন্দর, পাইলস, গেজ ইত্যাদি নামে অভিহিত করেন এবং অভ্যন্তরীণ দোষের কথা চিন্তা না করে কেবল স্রাবের দ্বারটি রুদ্ধ করার উপায় বের করেছেন। কিন্তু এ রূপ চিকিৎসার ফলে অভ্যন্তরীণ দোষ সমূহ প্রবল হয়ে ওঠে এবং জীবনীশক্তি হীনবল হয়ে নানা রকম মারাত্মক ব্যধির সৃষ্টি করে। ফলে রোগীর মৃত্যু ঘনাইয়া আসে বা দুরারোগ্য কোনো ভীষণ ব্যধির সৃষ্টি হয়ে আজীবন দুঃখ ভোগ করতে থাকে।
ফোন নামবার দেন
চিকিতসা নিব 01743247071
আমার external piles আছে।আমি হোমিওপ্যাথি খায়।মাঝে এটা কমে গিয়েছিল।কিন্তু এখন আবার বেড়ে গিয়েছে।এখন আমার কী করা উচিৎ
আপনি খাদ্যাভাস পরিবর্তন করুন। সবসময় খেয়াল রাখবেন যাতে কোষ্ঠকাঠিন্য না হয়। আর অবশ্যই একজন দক্ষ ও যোগ্যতা সম্পন্ন হোমিওপ্যাথিক ডাক্তার দেখান।
হোমিওপাথি চিকিতসা করলে কি piles নির্মুল হতে পারে...???
I bookmared your site a couple of days ago coz your blog impresses me...` cord blood uses