0
বর্ষাঋতুতে শিশুদের জন্য করণীয় (Child care in rainy season )

ষড়ঋতুর দেশ বাংলাদেশ। ঋতু পরিবর্তনের সাথে সাথে এদেশের প্রকৃতিতে লাগে পরিবর্তনের ছোঁয়া। এই পরিবর্তিত পরিবেশে মানব শিশুও যেন সুস্থ থাকে, সেটাই আমাদের কাম্য। আমাদের ছোট শিশুদের চলাফেরা, খাওয়া দাওয়া সবই সঠিকভাবে যেন হয় তা খেয়াল রাখতে হবে। এখন বর্ষাকাল। বর্ষা মানেই আবহাওয়ায় জলীয়বাষ্প বেশি। এই আবহাওয়ায় কিছু ভাইরাস সহজেই দুর্বল ও ছোট শিশুদের আক্রমণ করে। এজন্য এই আবহাওয়ায় শিশুদের যত্নে বেশি সচেতন হতে হয়। আমরা যারা ঢাকা শহরে বসবাস করি, তাদের প্রায় সকলেরই বাসা অতি ঘনবসতিপূর্ণ। ঘন ঘন বাসা মানেই বাতাস চলা চলে অপ্রতুলতা। বাসার চতুর্দিকে বাতাস চলাচলের ব্যবস্থা থাকতে হয়। যত বেশি বাতাস চলাচল করে তত বেশি পরিবেশ ভালো থাকে। ঘরে রোগজীবাণু কম হয়। ঘনবসতি এলাকায় দ্রুত ভাইরাস সংক্রমিত হয় এবং একজন অসুস্থ্য হলে অপরজনের অসুস্থ হওয়ার আশঙ্কা বেড়ে যায়। ছোট শিশুদের প্রচুর আলো-বাতাসপূর্ণ ঘরে রাখতে হবে। পরিবারে বড়দের কেউ ভাইরাসে আক্রান্ত হলে ছোট শিশুদের তার থেকে দূরে রাখতে হবে।
Child care in rainy season
Child care in rainy season


ছোট শিশুদের প্রতিদিন প্রয়োজনীয় গোসল যাতে দেওয়া হয়, সেটা নজর রাখতে হবে। যেহেতু আবহাওয়ার আদ্রতা বেশি, সেহেতু কাপড় শুকনো রাখার ব্যপারে সচেষ্ট হতে হবে। প্রয়োজনের অতিরিক্ত কাপড় না ভেজানো ভালো। শিশুদের গোসলের আগে তেল মালিশ করা পরিহার করতে হবে। সব সময় পরিষ্কার কুসুম গরম পানি (পানি অবশ্য সিদ্ধ করা হতে হবে) দিয়ে গোসল করাতে হবে।

ছোট শিশুদের রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা কম। সে জন্য বুকের দুধ খাওয়া শিশুদের অবশ্যই বারবার বুকের দুধ খাওয়াতে হবে। এছাড়া একটু বড় শিশুদের ( ছয় মাসের বড় ) বারবার সবজি, খিচুড়ি, মাছ ও গোশত খেতে দিতে হবে। রঙিন সবজি আর ফলের মধ্যে প্রচুর ভিটামিন ও মিনারেল থাকে। তাই প্রতিদিন খাদ্য তালিকায় সবজি ও ফলমূল থাকতে হবে। বারবার অনেক সময় ধরে বুকের দুধ খাওয়ালে শিশু অধিক পুষ্টি পাবে। বড়দের বেলায় ঘরের তৈরী খাবার দিতে হবে। পাশাপাশি (বিশুদ্ধ) পানি পান করতে দিতে হবে।

এখন শিশুদের জ্বর ও নাক দিয়ে পানি ঝরা- এই লক্ষণের প্রাদুর্ভাব দেখা দিয়েছে। এ লক্ষণগুলো ভাইরাসজনিত রোগের লক্ষণ। বাসায় বড়রা যদি আক্রান্ত হয় তবে শিশুদের তাদের থেকে দূরে রাখতে হবে। বারবার বুকের দুধ খাওয়াতে হবে। প্রয়োজনে নাকে মাস্ক ব্যবহার করতে হবে। শুষ্ক ও পরিষ্কার কাপড় পরাতে হবে। ঘরে পর্যাপ্ত বাতাস চলাচলের ব্যবস্থা রাখতে হবে। যদি পাতলা পায়খানা হয়, তবে খাবার স্যালাইন খাওয়াতে হবে। শিশুদের অবশ্যই পরিষ্কার হাতে খাওয়াতে হবে।

বাংলাদেশের এই ঋতু পরিবর্তনের সাথে সাথে আমাদের মায়েরা যেন তাদের শিশুদের যত্ন নিতে পারেন, সে জন্য মায়েরাও কিছু কিছু তথ্য নিজেরা জেনে নেবেন। অন্যথায় সাধারণ সর্দিকাশি নিয়ে হাসপাতালের বহির্বিভাবে ভিড় বাড়িয়ে দেয়া ছাড়া কিছুই করার থাকেনা। সর্দিকাশিতে আক্রান্ত হলে নরম কাপড় দিয়ে নাক মুছে দেয়া, প্রয়োজনে Normal Saline drop দিয়ে নাকে আদ্রতা ধরে রাখতে হবে।

এ ধরনের সর্দিকাশিতে কোনো ওষুধের প্রয়োজন হয় না। বড় শিশুদের বেলায় লেবু চা, আদার চা, গরম পানি লবণ দিয়ে খাওয়ানো যেতে পারে, তাতে শিশুর ঠান্ডার কিছুটা উপশম হবে। যদি কাশি ঘন ঘন লেগে থাকে তবেই কেবল শিশুবিশেষজ্ঞের পরামর্শের প্রয়োজন পড়ে।


ডাঃ নাদিরা আফরোজ
      শিশুবিশেষজ্ঞ
ইবনে সিনা হেলথ ম্যাগাজিন হতে সংগৃহিত।

Post a Comment

 
Top