কামরাঙার ভেষজগুণ বা উপকারিতা। বাড়ির আনাচে-কানাচে গজিয়ে ওঠা গাছ কামরাঙ্গা। সবুজ ও হলুদের মিশ্রণে বাহারি ফলটির বেশ চাহিদা রয়েছে আমাদের কাছে।
কামরাঙার ভেষজগুণ বা উপকারিতা।
বাড়ির আনাচে-কানাচে গজিয়ে ওঠা গাছ কামরাঙ্গা। সবুজ ও হলুদের মিশ্রণে বাহারি ফলটির বেশ চাহিদা রয়েছে আমাদের কাছে। এই সময়ে ফলটি বাজারেও বেশ সহজলভ্য। অন্যান্য ফলের তুলনায় এর দামও কম। তাই ঔষধীগুণ সমৃদ্ধ ফল কামরাঙ্গা যেমন পূরণ করবে শরীরের পুষ্টি তেমনি প্রতিরোধ করবে নানান রোগ।
কামরাঙার ভেষজগুণ বা উপকারিতা। |
টক ও মিষ্টি স্বাদযুক্ত দু’ধরনের কামরাঙ্গা সাধারণত পাওয়া যায়। এতে ভিটামিন-এ অল্প পরিমাণে থাকলেও অন্যান্য পুষ্টি উপাদান উল্লেখযোগ্য পরিমাণে থাকে।এতে ভিটামিন সি-এর পরিমাণ আম, আঙ্গুরের, আনারস চেয়ে বেশি।
কামরাঙার ভেষজগুণ বা উপকারিতা।
কামরাঙ্গায় আয়রনের পরিমাণ পাকা কাঁঠাল, কমলালেবু, পাকা পেঁপে, লিচু ও ডাবের পানির থেকেও বেশি। আবার কামরাঙ্গা দিয়ে চাটনি, জ্যাম, জেলি ইত্যাদি তৈরি করা যায়। এই সময়ের দৃষ্টিনন্দন ফল কামরাঙা। ভিটামিন সি-তে পূর্ণ কামরাঙা।এতে আরও রয়েছে উচ্চমানের ভিটামিন এ।
খেলোয়াড়, অ্যাথলেটদের জন্য, বাড়ন্ত শিশুদের জন্য এই ফল যথেষ্ট উপকারী। কামরাঙায় নেই কোনো চর্বি বা ফ্যাট। তাই এই ফল খেলে রক্তে চিনি বা চর্বি বৃদ্ধির আশঙ্কা নেই। অতিরিক্ত টক লাগে বলে ডাল বা তরকারির সঙ্গে রান্না করে খেতে পারেন।
কামরাঙার ভেষজগুণ বা উপকারিতাঃ
- এতে থাকে এলজিক এসিড ( Ellagic acid ) যা খাদ্যনালির বা অন্ত্রের(Intestinal) ক্যান্সার প্রতিরোধ করে।
- এর পাতা ও কচি ফলের রসে রয়েছে ট্যানিন ( Tannin ), যা রক্ত জমাট বাঁধতে সাহায্য করে।
- পাকা ফল রক্তক্ষরণ ( blood secretion ) বন্ধ করে।
- ফল ও পাতা ( Fruits and leaves ) গরম পানিতে সিদ্ধ করে পান করলে বমি ( Vomit ) বন্ধ হয়।
- কামরাঙ্গা চুল, ত্বক, নখ ও দাঁত তুলনামূলকভাবে ভঙ্গুরহীন এবং উজ্জ্বল করতে সহায়তা করে।
- এর পাতা ও ডগার গুঁড়া খেলে জলবসন্ত ( Chicken pox ) ও বক্রকৃমি নিরাময় হয়।
- কামরাঙ্গা ভর্তা খেলে ঠান্ডাজনিত সর্দিকাশি (Coldness and Coughing) সমস্যা সহজেই ভালো হয়ে যায়।
কামরাঙার ভেষজগুণ বা উপকারিতা।
- এর মূল বিষনাশক (Anti-venom) হিসেবে ব্যবহৃত হয়।
- কামরাঙ্গা ভর্তা রুচি ও হজমশক্তি ( Digestion ) বাড়ায়।
- পেটের ব্যথায় (Abdominal pain) কামরাঙ্গা খেলে উপকার পাওয়া যায়।
- শুকানো কামরাঙ্গা জ্বরের ( Fever ) জন্য খুবই উপকারী।
- পানির সঙ্গে দুই গ্রাম পরিমাণ শুকনো কামরাঙ্গার গুঁড়া রোজ একবার করে খেলে অর্শ (Piles) রোগে উপকার পাওয়া যায়।
- কামরাঙ্গা শীতল ও টক (Sour)। তাই ঘাম, কফ ও বাতনাশক হিসেবে কাজ করে।
- কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে।
- ত্বকে ব্রণ হওয়ার পরিমাণ কমায়।
কামরাঙা কখন বা কাদের খাওয়া উচিত নয়ঃ
- ডায়রিয়া চলাকালে বা ডায়রিয়া ভালো হওয়ার ( During and after diarrhea ) পরপরই এই ফল খাওয়া উচিত নয়।
- কিডনিতে ইনফেকশন এবং পাথর রয়েছে এমন ব্যক্তিদের জন্য পরিহার করা উচিত।
- হার্ট দুর্বলদের জন্যও এই ফল বর্জনীয়।
- কোনো অবস্থাতেই খালি পেটে খাওয়া উচিত নয়।
- কামরাঙ্গা একটি অক্সালেট ( Oxalate ) সমৃদ্ধ ভিটামিন সি জাতীয় ফল। অক্সালেট যে কারো কিডনি বিকল ( Kidney failure ) ও প্রস্রাব নির্গমনের পরিমাণ হঠাৎ করে কমে যাওয়ার ( Retention of urine ) কারণ হতে পারে।
- কিডনি রোগী, হাইব্লাড প্রেসার (High blood pressure ), হূদরোগী কিংবা যে কোন রোগীর কামরাঙ্গার জুস সেবন না করাটা ভাল।
COMMENTS