পেঁয়াজ এর ভেষজগুণ ( Onion or Allium cepa ): আমাদের দেশে রান্নায় পেঁয়াজ ব্যবহার হয় অহরহ। কিন্তু এটি সরাসরি তরকারি হিসেবেও ব্যবহার হতে...
আমাদের দেশে রান্নায় পেঁয়াজ ব্যবহার হয় অহরহ। কিন্তু এটি সরাসরি তরকারি হিসেবেও ব্যবহার হতে পারে এবং তা হতে পারে শরীরের জন্য খুবই পুষ্টিকর। একইসঙ্গে এটি কমাতে পারে আপনার শরীরের বাড়তি ওজনও।
সেই খ্রিস্টপূর্ব ৩৫০০ সালের দিকে এর উপকারিতার জন্য মিশরীয়রা এর ভক্ত ছিল। খুব জনপ্রিয় ছিল সে সময় তরকারি হিসেবে পেঁয়াজ। গবেষকরা তাই বলেন।
![]() |
Onion or Allium cepa |
পেঁয়াজে আছে উচ্চমানের সালফার যৌগ। আর এর কারণেই পেঁয়াজ কাটলে নাকে লাগে ঝাঁঝালো গন্ধ। চোখে পানি চলে আসে।
আমাদের শরীরে ২০ ভাগ ভিটামিন সি-এর অভাব মেটানো সম্ভব এই পেঁয়াজ থেকেই।
স্বাস্থ্য রক্ষায় পেঁয়াজের গুণাগুণ অনেক। আমাদের হাতের নাগালে থেকেও আমরা এর অনেক গুণ সম্পর্কে ভালো করে জানি না।
একটি বড় মাপের পেঁয়াজে ৮৬.৮ % পানি, ১.২% প্রোটিন, ১১.৬% শর্করা জাতীয় পদার্থ, ০.১৮ % ক্যালসিয়াম, ০.০৪% ফসফরাস ও ০.৭% লোহা থাকে। এছাড়াও পেঁয়াজে উচ্চমাত্রায় ভিটামিন এ, বি এবং সি থাকে।
পেঁয়াজের গুণাগুণঃ
বমি হলেঃ
বমি বারবার হলে- চার থেকে পাঁচ ফোঁটা পেঁয়াজের রস পানির সাথে মিশিয়ে খেলে বমি হওয়া বন্ধ হয়ে যাবে।
হিক্কা বা হেঁচকিঃ
বারবার হেঁচকি উঠলে- পেঁয়াজের রস মিশিয়ে পানি খেলে হেঁচকি ওঠা বন্ধ হয়ে যাবে।
অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল প্রভাবঃ
এতে অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল প্রভাব রয়েছে। তাই ফোঁড়া বা ঘা হলে তা পেঁয়াজের রস দিয়ে ধুলে তাড়াতাড়ি সেরে যায়।
নতুন চুল গজাতে সহায়তা করেঃ
চুল ধৌত করার আগে মাথায় আধঘণ্টা পেঁয়াজের রস মেখে রাখলে চুলের গোড়া শক্ত হয় এবং নতুন চুল গজাতে সহায়তা করে।
কাঁশি নিরাময় করেঃ
পেঁয়াজের রস, আদা এবং তুলসি পাতা একসাথে খেলে কাঁশি দূর হয়। এ ছাড়া যাদের দীর্ঘদিন ধরে বুকের মধ্যে কফ জমে আছে তারা প্রতিদিন সকালে এই তিন পদ মিশিয়ে খেলে উপকার পাবেন।
ক্যান্সারের কোষ ধ্বংস করেঃ
পেঁয়াজে থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট শরীরের ক্যান্সারের কোষ ধ্বংস করে। কাঁচা পেঁয়াজের রস ক্যান্সারের বৃদ্ধি রোধ করার জন্য সবচেয়ে ভালো উপায়। পেঁয়াজের মধ্যে আছে ফাইটোকেমিক্যাল এবং ফ্লাবোনয়েড কোয়েরসেটিন। এ দুটো উপাদান ক্যান্সার কোষের অনিয়ন্ত্রিত গ্রোথ কন্ট্রোল করতে পারে বলে বিজ্ঞানীরা প্রমাণ পেয়েছেন।
উচ্চ রক্তচাপ কমায়ঃ
পেঁয়াজ উচ্চ রক্তচাপ কমাতে সাহায্য করে। ফলে উচ্চরক্তচাপের রোগীরা নিয়মিত পেঁয়াজ সমৃদ্ধ তরকারি বা পেঁয়াজের তরকারি খেলে উপকার পাবেন।
হিটস্ট্রোক থেকে রক্ষাঃ
সঠিক সময়ে চিকিৎসা না করালে হিটস্ট্রোক অত্যন্ত বিপজ্জনক হতে পারে। এই ধরনের স্ট্রোক হলে পায়ের ওপর এবং ঘাড়ের পেছনে পেঁয়াজ বেঁটে দিলে শরীরে ঠাণ্ডা প্রভাব ফেলে, যা স্ট্রোক থেকে রক্ষা করে।
জন্ডিস প্রতিরোধঃ
একটি পেঁয়াজের এক-চতুর্থাংশ সারা রাত লেবুর রসে ভিজিয়ে রেখে সকাল বেলা খেলে উপকার পাওয়া যাবে। নাকের রক্ত বন্ধ করে : নাকদিয়ে রক্ত পরলে ৩-৪ ফোঁটা পেঁয়াজের রস দিলে রক্ত বন্ধ হয়ে যাবে।
সুস্থ কিডনিঃ
পেঁয়াজের রসের সাথে চিনি মিশিয়ে খেলে কিডনির উপকার পাওয়া যায়। শরীরের অতিরিক্ত ইউরিক এসিড বের হয়ে যায়।
হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি কমায়ঃ
পেঁয়াজ হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকিও কমায়। অতএব যারা পেঁয়াজ খান তারা খানিকটা চিন্তামুক্ত থাকতে পারেন।
হোমিওপ্যাথি ওষুধঃ
পেঁয়াজ এর ব্যবহার হোমিওপ্যাথিতেও খুব বিস্তর ভাবে রয়েছে। হোমিওপ্যাথিতে এর ব্যবহার জানতে আমরা হোমিওপ্যাথিক মেটেরিয়া মেডিকা পড়তে পারি। হোমিওপ্যাথিতে এর ব্যবহার সম্পর্কে জানতে Allium Cepa তে ক্লিক করুন।
COMMENTS