হস্তমৈথুন বা স্বমেহন হচ্ছে সেই প্রক্রিয়া যার মাধ্যমে নারী-পুরুষ সাধারণত বিপরীত লিঙ্গের অভাবে বা মনো-বিকৃতিতে নিজের সঙ্গী থাকা সত্ত্বেও নিজে নিজেই কাম চরিতার্থ করার একটি পদ্ধতি। এতে নিজেই নিজের রতিশক্তিকে উদ্দীপিত করে, নিজের দ্বারা রতি সুখে ( Sexual enjoyment ) আনন্দলাভ করে।
![]() |
Mustervation or Sexual abuse |
হস্তমৈথুনকে কুঅভ্যাস বলার কারণঃ
হস্তমৈথুনকে কুঅভ্যাস বলার প্রধান কারণ হল- অল্প বয়সে যদি শরীর থেকে শুক্রক্ষয় হতে থাকে তবে শরীর দুর্বল হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে। অনেকেই বলে থাকেন হস্তমৈথুনে শরীরের কোনও ক্ষতি হয় না, বাস্তবিকই পরিমিত শুক্রক্ষরণ (বীর্যপাত) শরীরের কোনও ক্ষতি করে না। কিন্তু পরিমিত কথাটাই আপেক্ষিক- শুক্র যে কোন পুরুষের মানষিক ও শারীরিক শক্তি বৃদ্ধির জন্য একটি অতি প্রয়োজনীয় উপাদান। এই উপাদান শরীরের মধ্যে সঞ্চিত রাখতে পারলে পুরুষ তেজদীপ্ত ও শক্তিমান হয়। কাজেই শরীর থেকে এই প্রয়োজনীয় উপাদানটি যত কম খরচ হয় ততই ভাল। তবে যে পুরুষের কামের তীব্রতা যত বেশি তার হস্তমৈথুন দ্বারা কাম চরিতার্থ করার প্রবণতা তত বেশি হয়।
বিবাহিত জীবনে যৌন মিলন স্বাভাবিক হলেও হস্তমৈথুন নয়ঃ
হস্তমৈথুন ও বিবাহিত জীবনে যৌন সহবাস ( Sex or, Intercourse ) উভয়ই স্বাভাবিক। কিন্তু হস্তমৈথুন কিশোর বয়সের সমস্যা। এই সময় শরীর গঠনের সময়। তাই এই সময় দেহ সুষ্ঠ ও সবল হলে পরবর্তী জীবনে সে সুখী ও সমৃদ্ধশালী হতে পারে। কিন্তু এই বয়সে কামের তীব্রতা দেহে বেশি হয় বলে শুক্র ক্ষরণের সম্ভাবনাও বেশি হয়। এই সময় সে যদি তার ক্ষমতার অতিরিক্ত শুক্রক্ষয় করে ফেলে তবে পরবর্তী জীবনে সে যৌন দুর্বলতায় ভুগতে পারে।
সুবিধাঃ
১. হস্তমৈথুন যৌন সুখ লাভ করার একটি পদ্ধতি মাত্র। কাজেই এই পদ্ধতির সঠিক ব্যবহার পুরুষ ও নারীকে যৌন অতৃপ্তি থেকে রক্ষা করে।
২. এই পক্রিয়ায় পুরুষের ফাইমোসিস ( যখন লিঙ্গের আবরক চামড়া লিঙ্গমুন্ডের সাথে জুড়ে যায়, এতে লিঙ্গমুন্ডকে চামড়ার বাইরে উন্মুক্ত করা যায় না। ) রোগ হতে পারে না।
৩. অবৈধ যৌনাচার বা ব্যভিচার থেকে রক্ষা করে। এতে যৌন বাহিত রোগ যেমন- সিফিলিস, গনোরিয়া, এইডস ইত্যাদির মত মারাত্বক রোগ থেকে রক্ষা পায়।
৪. হস্তমৈথুনের ফলে লিঙ্গের স্পর্শকাতরতা অনেক কমে যায়, যার ফলে বিয়ের পর নারীর সঙ্গে প্রথম যৌন মিলনে দ্রুত বীর্যপতনের সমস্যা দেখা দেয় না।
৫. পুরুষাঙ্গের চাপ গ্রহন ক্ষমতা বাড়ে যার ফলে নারীর সঙ্গে যৌন মিলনে বিশেষ অসুবিধা হয় না।
অসুবিধাঃ
অতিরিক্ত হস্তমৈথূন্যের ফলে শক্তি হ্রাসসহ নানাবিধ শারীরিক সমস্যা দেখা দেয়।
তার মধ্যে উল্ল্যেখযোগ্য হলঃ
১. হস্তমৈথুন যৌন সুখ লাভ হয়। একবার এই যৌন সুখের আস্বাদ পেলে বার বারই তা পাওয়ার ইচ্ছায় মাত্রাতিরিক্ত শুক্রক্ষরণের সম্ভাবনা থাকে।
২. অতিমাত্রায় শুক্র দেহ থেকে নির্গত হলে দেহের স্নায়ু দুর্বল হয়।
৩. স্নায়ু দুর্বল হলে দেহের বীর্যধারণ ক্ষমতা কমে যায়।
৪. বীর্যধারণ ক্ষমতা কমে গেলে প্রস্রাব বা পায়খানার সাথে ধাতু নির্গত হতে থাকে।
৫. স্বপ্নদোষ ( Night pollution ) বেশি দেখা যায়।
৬. লিঙ্গের যৌন উত্তেজনা দেখা দিলেই রেতঃপাত হতে সম্ভাবনা থাকে। পুরুষাঙ্গের উত্থান ক্ষমতা কমে যায়।
৭. অতিমাত্রায় শুক্রক্ষরণের ফলে মস্তিস্ক দুর্বল হয়, যাতে স্মরণশক্তি কমে যায়।
৮. শরীর ব্যথা এবং মাথা ঘোরা।
৯. যৌন ক্রিয়ার সাথে জড়িত স্নায়তন্ত্র দুর্বল করে দেয় অথবা ঠিক মত কাজ না করার পরিস্থতি সৃষ্টি করে।
১০. শরীরের অন্য অঙ্গ যেমন হজম প্রক্রিয়া এবং প্রস্রাব প্রক্রিয়ায় সমস্যা সৃষ্টি করে।
১১. দৃষ্টিশক্তি দুর্বল করে দেয়, চোখে ঝাপসা দেখে এবং মাথা ব্যাথা সৃষ্টি করে।
১২. হৃদকম্পনে দ্রুততা আসে, হাত-পা কাঁপতে থাকে এবং অনেক কোন কাজ ঠিকমত করতে পারেন না।
১৩. ব্যক্তি কোনো কঠিন শারীরিক বা মানসিক কাজ এর অসমর্থ এবং কোন কাজে মন বসে। তিনি সাধারণত নির্জনতায় থাকতে- চেষ্টাকরে এবং তার জ্ঞান বৈকল্য হয়।
১৪. কেউ কেউ হয়তো তোতলানো এবং কানে কম শোনা রোগে আক্রান্ত হতে পারেন।
১৫. হস্তমৈথূন পুরুষাঙ্গে ছিদ্র সৃষ্টি করতে পারে ।
শুক্রক্ষরণের ফলে দেহের এই দুর্বলতা পুষ্টিকর খাবার গ্রহন ও বীর্যপাতের পরিমাণ কমে গেলে আবার ঠিক হয়ে যায়।
হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসাঃ
হোমিওপ্যাথি ওষুধ সবচেয়ে জনপ্রিয় রোগ নিরাময়ের একটি পদ্ধতি। এ পদ্ধতিতে ব্যক্তি স্বাতন্ত্র ও সদৃশ উপসর্গের উপর ভিত্তি করে চিকিৎসা করা হয়। এটি উপসর্গ ও জটিলতা মুছে ফেলে সম্পূর্ণ স্বাস্থ্য অবস্থায় রোগীর ফিরে যাবার একমাত্র উপায়। সদৃশবিধানের লক্ষ্য শুধু হস্তমৈথুনের কুফল চিকিত্সা নয়, তার অন্তর্নিহিত কারণ ও স্বতন্ত্র প্রবণতা মোকাবেলায়ও সহায়তা করে। স্বতন্ত্র ঔষধ নির্বাচন এবং চিকিত্সার জন্য, রোগীকে একজন যোগ্যতাসম্পন্ন ও রেজিস্টার্ড হোমিওপ্যাথিক ডাক্তারের সঙ্গে পরামর্শ করা উচিত। হস্তমৈথুনের কুফল চিকিত্সার সহায়ক ঔষধগুলো নিম্নরুপঃ
এসিড ফস, এগ্নাস ক্যাস্ট, বিউফো রানা, আর্নিকা, সিনা, বেলিস পের, লিউপুলাস হিউমুলাস, সেলিক্স নাইগ্রা, ক্যাল্কেরিয়া ফস, স্টেফিস্যাগ্রিয়া, ক্যান্থারিস, ওরিগ্যানাম, থুজা ইত্যাদি।
Post a Comment
ধন্যবাদ
হস্থমৈথুনের ফলে আমার লিঙ্গ এখন ভঙ্গুর অবস্থা এর কি কোন চিকিৎসা আছে? যদি থাকে তাহলে কী করতে হবে আমাকে, আমি এই বিষয়টি নিয়ে বেশ চিন্তিত, দয়া করে উত্তর দিবেন। ধন্যবাদ।
হস্থমৈথুনের কারনে আমার লিঙ্গ ভঙ্গুর অবস্থা, এর কি কোন চিকিৎসা আছে? থাকলে বলবেন কি, কিভাবে এ অবস্থা থেকে পরিত্রান পেতে পারি দয়া করে জানাবেন. ধন্যবাদ।
Post a Comment