এনাল ফিসার, ফিস্টুলা, পাইলস এবং হোমিওপ্যাথি।

এনাল ফিসার, ফিস্টুলা, পাইলস এবং হোমিওপ্যাথি। মলদ্বারের রোগমলদ্বারের রোগ সমূহ বিভিন্ন কারনে হয়ে থাকে বিশেষ করে কোষ্ঠ্যকাঠিন্য প্রধান কারন।

এনাল ফিসার, ফিস্টুলা, পাইলস এবং হোমিওপ্যাথি।

মলদ্বারের রোগ সমূহঃ এনাল ফিসার, ফিস্টুলা পাইলসঃ 
মলদ্বারের রোগমলদ্বারের রোগ সমূহ বিভিন্ন কারনে হয়ে থাকে বিশেষ করে কোষ্ঠ্যকাঠিন্য প্রধান কারন। এনাল ফিসার, পাইলস, ফিস্টুলা সহ মলদ্বারের সকল রোগই এ্যালোপ্যাথিক চিকিৎসা ব্যাবস্থায় র্সাজারি দ্বারা এবং হোমিওপ্যাথি চিকিৎসায় সার্জারি ছাড়াই সর্ম্পূন র্নিমূল করা সম্ভব হয়।

এনাল ফিসার, ফিস্টুলা, পাইলস এবং হোমিওপ্যাথি।
এনাল ফিসার, ফিস্টুলা, পাইলস এবং হোমিওপ্যাথি।

এনাল ফিসারঃ

যে রোগে সাধারণত শক্ত মল হলে বা ঘন ঘন মলত্যাগের কারণে মলদ্বার ফেটে ঘা হয়ে যায়, ফলে মলদ্বারে ব্যথা বা জ্বালাপোড়া হয় তার নাম এনাল ফিসার। এই ঘা সহজে শুকাতে চায় না। কিছু কিছু রোগীর এই ঘা শুকিয়ে গেলেও কিছু দিন পর আবার মল শক্ত হলে আবারও একই সমস্যা দেখা দেয়। 

এ রোগের উপসর্গেরও বেশ তারতম্য হয়। কোন কোন রোগীর মলত্যাগের পর সামান্য জ্বালা পোড়া হয় এবং তা ৫ থেকে ১৫ মি: পর্যন্ত চলে। মাঝে মাঝে ব্যথার তীব্রতা বাড়ে, যা কয়েক ঘন্টা এমনকি সারাদিন চলতে থাকে। কারো কারো মাথা ধরে যায়। 

দীর্ঘস্থায়ী এনাল ফিসারে মাঝে মাঝে মোটেই ব্যথা থাকে না। মলদ্বারের রোগের মধ্যে এটিই সবচেয়ে বেশি হয়। তরুণ ও যুবকদের রোগটি বেশী হয়। পুরুষ অথবা নারী উভয়ের এ রোগটি সমান ভাবে হয়ে থাকে।

পাইলস বা অর্শ্বঃ

পাইলস (Piles or Hemorrhoids) বা অর্শ বা গেজ হচ্ছে মলদ্বারের এক ধরনের রোগ, যেখানে রক্তনালীগুলো প্রশস্ত হয়ে গিয়ে ভাসকুলার কুশন তৈরি করে।
 অর্শ্ব বা পাইলস (Piles or Hemorrhoids)  হলে সাধারণত যেসব লক্ষণ ও উপসর্গগুলো দেখা দেয় তা হলোঃ
  • মলত্যাগের (Evacuation) সময় ব্যথাহীন রক্তপাত (Painless bleeding)
  • পায়ুপথ চুলকানো (Itching) অথবা অস্বস্তিকর জ্বালাপোড়া (Burning) ব্যথা
  • পায়ুপথ থেকে বাইরের দিকে ফোলা (Swelling) ও ব্যথা লাগা
  • পায়ুপথের মুখে ব্যথা ও চাকা অনুভব করা 
অধিকাংশ পাইলসের রোগীদের ক্ষেত্রেই কোনো লক্ষণ থাকে না।

ফিস্টুলা/ভগন্দরঃ

ফিস্টুলা একটি নালী ঘাঁ যা মলদ্বারের ভেতরে শুরু হয়ে মাংসের ভেতর দিয়ে মলদ্বারের পাশে একটি মুখ হয়ে বেরিয়ে আসে এবং মাঝে মাঝে এখান থেকে পুঁজ পড়ে ও ব্যথা হয়। পেরিএনাল এবসেস বা ফোঁড়া যদি নিজে নিজে ফেটে যায় কিংবা অসম্পূর্ণভাবে অপারেশনের মাধ্যমে পুঁজ বের করা হয় তাহলে এই রোগের উত্পত্তি হয়ে থাকে। 

এ রোগের দুটি মুখ থাকে। একটি থাকে মলদ্বারের ভেতরে এবং অন্যটি বাইরের চামড়ায়। মাঝে মাঝে মলদ্বারের বাইরে ও ভেতরে একাধিক মুখও থাকতে পারে। যাকে আমরা বহুমুখী ফিস্টুলা বলে থাকি। বেশ কিছুদিন স্কিনের মুখটি বন্ধ থাকে এবং ভেতরে পুঁজ ও ময়লা জমতে থাকে। 

ফলে মুখ ও আশপাশ ফুলে যায় এবং ব্যথা হয়। এক সময় মুখ ফেটে পুঁজ ও ময়লা জাতীয় আঠালো পদার্থ বের হয়ে আসে এবং রোগী সুস্থ অনুভব করে। রোগটির পুনরাবৃত্তি ঘটতেও পারে এবং জটিলতর হতে পারে।

রোগের কারণ এবং কি করে ঘটেঃ 

  • সাধারণত কোষ্ঠকাঠিন্য (Constipation) অথবা মলত্যাগের সময় কুথুনি ( Tenesmus ) দেয়া। শক্ত মল (Hard Stool) বের হওয়ার সময় মলদ্বার ফেটে যায় বলে মনে করা হয়।
  • ঘন ঘন মলত্যাগ (Frequent Evacuation ) বা ডায়রিয়া (Diarrhea) হলে ফিসার হওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যায়। যদিও আঙ্গুল দিয়ে পরীক্ষা করলে মলদ্বার অতিরিক্ত সংকুচিত (Shrinkage) বলে মনে হয়।
  • গর্ভাবস্থার শেষের (Last period of pregnancy ) দিকে অনেকে এনাল ফিসারের সম্মুখীন হতে পারেন। বাচ্চার বৃদ্ধির সাথে সাথে মলদ্বারে চাপের কারণে এই ফিসার হয়।
  • পায়ুপথে যৌনমিলনে (Anal Intercourse) অভস্ততা ফিসার এর সূত্রপাত ঘটাতে পারে।
  • মলদ্বারের ভিতর সাপোজিটরী (Suppository) জাতীয় ওষুধ দেয়ার সময় অনেকের মলদ্বারে ঘা হয়, তা থেকেও অনেক রোগীর বিশেষ করে মহিলাদের এ জাতীয় রোগ হতে পারে।

উপসর্গ ও লক্ষণসমূহঃ

মলদ্বারে ফিসারের প্রধান লক্ষণ হলো ব্যথা (Pain), জ্বালাপোড়া(Burning) ও রক্তক্ষরণ (Bleeding)। এ ধরণের ব্যথা সাধারণত মল ত্যাগের অব্যবহিত পরে হয় এবং কয়েক মিনিট থেকে বহু ঘন্টা এমনকি সারাদিনও চলতে পারে। ‘প্রকটালজিয়া ফিউগাঙ্’ নামক এক ধরনের রোগেও মলদ্বারে ব্যথা হয় কিন্তু তা মলত্যাগের পরেই শুধু হয় না, যে কোন সময় হতে পারে। 

প্রতিরোধঃ 

কোষ্ঠকাঠিন্য সেদিকে অবশ্যই খেয়াল রাখা উচিত এবং বেশী শক্তি প্রয়োগে বা কুথঁনি দিয়ে মলত্যাগ করা উচিত নয়। বারে বারে মলত্যাগের অভ্যাস ত্যাগ করতে হবে এবং ডায়রিয়া হলে দ্রুত চিকিৎসা করতে হবে।

কি খাবেন?

১. যারা আঁশযুক্ত (Fiber) খাবার খান তাদের এ রোগ কম হয়। আঁশযুক্ত খাবারের মধ্যে রয়েছে শাক-সবজি, আলু, ছোলা, কাঁচা ফলমূল, ইসুপগুলের ভূষি ইত্যাদি। এতে থাকা আঁশ মলে পানি ধরে রেখে মলকে নরম (Soft stool) করে। ফলে কোষ্টকাঠিন্য এর সম্ভাবনা থাকেনা।

২. ডাল জাতীয় খাবার খান। এক কাপ ডালে ১৫-১৬ গ্রাম আঁশ (Fiber) থাকে। দিনে অন্তত দুই কাপ ডাল খান।

৩. খোসাহীন শস্যের চাইতে খোসা যুক্ত শস্য খান। সাদা চাল বা আটা এর বদলে লাল চাল বা ঢেঁকি ছাটা চাল বা আটা খান। খোসা, প্রচুর পরিমানে আশ ও ভিটামিন সরবরাহ করে।

৪. নিয়মিত দই খান। এতে থাকা উপকারী ব্যক্টেরিয়া কোষ্টকাঠিন্য রোধে সহায়তা করে।

৫. দিনে ৮-১০ গ্লাস পানি খান।

কি খাবেন না?

১. প্যাস্তা (Pasta), ক্র্যাকার, ভাত, বিস্কিট, রুটি ইত্যাদিতে আঁশ অনেক কম। ধরুন আপনি এক বেলার খাবারে নিয়মিত পাস্তা খান বা এক প্যাকেট বিস্কিট খান বা অল্প পরিমান সব্জী দিয়ে বা সব্জী ছাড়া প্রচুর পরিমাণে রুটি বা ভাত খান- এই ধরণের খাদ্যাভাসে অভ্যস্ত থাকলে আপনার শরীরে আঁশ গ্রহণ কম হচ্ছে, যাতে দেখা দিতে পারে কোষ্টকাঠিন্য। 
মোটকথা কোষ্টকাঠিন্য নিরোধে কার্বোহাইড্রেটের সঙ্গে আঁশ এর অনুপাত ঠিক থাকতে হবে।

২. ফ্যাটি ও উচ্চ সুগার (Fatty and High sugar) যুক্ত খাবার নিয়মিত গ্রহণের অভ্যাস ও কোষ্টকাঠিন্য ঘটাতে পারে। যেমন, গরুর মাংস, চকোলেট, চীজ, আইস্ক্রীম, মাখন, কোমল পানীয়, ফ্রাইড খাবার ইত্যাদি।

ব্যায়ামঃ 

যাদের কোষ্টকাঠিন্য আছে তারা ব্যায়ামের মাধ্যমে কোষ্টকাঠিন্য কমাতে পারেন। ফলে পাইলস হওয়ার সম্ভাবনাও কমে। মাটিতে সোজা শুয়ে পরুন (Lye straight ), পা মাটিতে মেশানো থাকবে (Leg on ground), পায়ের পাতা ছাদমুখী থাকবে। 

এবার পেটের পেষী ভিতরে দিকে টেনে ধরে আস্তে আস্তে শ্বাস নিন (Slowly inspiration) ও ডান পা (Right leg) টা আস্তে আস্তে দূরে নিন। যতদূর পারেন করুন, এরপর শ্বাস ছাড়তে ছাড়তে (Expiration) পা আগের জায়গায় আনুন। এরপর বাম পা ব্যবহার করে একই ব্যায়াম করুন।

মলদ্বারের যত্নঃ

মলদ্বার ও প্বার্শবর্তী (Rectal region) অঞ্চল যথাসম্ভব পরিষ্কার রাখুন। সুতী ও ঢিলেঢালা অন্তর্বাস (Under ware) পরিধান করুন। অন্তর্বাসের ভিতরে নরম কোন প্যাড (Soft pad) ব্যবহার আপনাকে স্বস্তি দেবে। মাঝে মাঝেই সিজ বাথ (Sitz Bath) নিতে পারেন, অর্থাৎ আধ গামলা লবণ মিশ্রিত হাল্কা গরম পানিতে নিতম্ব (Waist) ১০ মিনিট ডুবিয়ে রাখতে হবে।

এনাল ফিসার, ফিস্টুলা, পাইলস চিকিৎসাঃ

সার্জিক্যাল চিকিৎসাঃ

এলোপ্যাথিতে সার্জারী ব্যতিত এ রোগের জন্য মেডিসিনাল চিকিৎসা কমই আছে। সার্জারী করলেই সব সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে এমন কিছু নেই, বার বার আক্রান্ত হলে সার্জারী করবেন কোথায় ( ভালো থাকা যায়?)।

এনাল ফিসার, ফিস্টুলা, পাইলস এবং হোমিওপ্যাথিঃ

এনাল ফিসার, ফিস্টুলা, পাইলসসহ  মলদ্বারের সকল রোগই হোমিওপ্যাথি চিকিৎসায় সর্ম্পূন র্নিমূল করা সম্ভব হয়। সার্জারি চিকিৎসায় এক  বা দুই বছর পর পুনরায় এ রোগ দেখা দেয় কিন্তু হোমিও চিকিৎসায় সম্পূর্ন নির্মূল হয়ে যায়। হোমিওপ্যাথি একটি লক্ষণ ভিত্তিক চিকিৎসা পদ্ধতি। এতে রোগীর ব্যক্তিস্বাতন্ত্র ভিত্তিতে লক্ষণ সমষ্টির উপর ঔষধ নির্বাচন করা হয়। এটি নিরাপদ, সহজ লভ্য এবং কম ব্যয় সাপেক্ষ্য। সঠিক চিকিৎসার জন্য আপনি অবশ্যই একজন যোগ্যতা সম্পন্ন (BHMS) হোমিওপ্যাথ এর পরামর্শ নিবেন।

এনাল ফিসার, ফিস্টুলা, পাইলস এবং হোমিওপ্যাথি চিকিৎসায় নিম্নে রবিন মার্ফির রেপার্টরির প্রথম গ্রেডের ঔষধের নাম তুলে ধরা হলঃ 

অরাম মিউর, ইস্কিউলাস হিপ, এগারিকাস, এলো, আর্সেনিক এল্ব, কার্বো এনো, কার্বো ভেজ, কস্টিকাম, কলিনসোনিয়া, গ্রাফাইটিস, হ্যামামেলিস, ক্যাল্কেরিয়া কার্ব, ক্যাল্কেরিয়া ফস, ক্যামোমিলা, ক্যালি আর্স, ক্যালি কার্ব, ক্যালি সালফ, ল্যাকেসিস, লাইকোপোডিয়াম, মার্ক আয়োড রোব্রাম, নাইট্রিক এসিড, নাক্স ভম, পিয়নিয়া, ফসফরাস, বারবারিস, পালসেটিলা, রাটানহিয়া, সেপিয়া, সাইলিসিয়া, সালফার, থুজা।

COMMENTS

BLOGGER: 2
  1. ৬-৭ মাস যাবৎ দীর্ঘ ফিসার কি হোমিও চিকিৎসার মাধ্যমে ভালো হবে? ফিসারের সাথে প্রসাবে জ্বালাপোড়া ও হালকা ব্যাথা হয়- এটা কি স্বাভাবিক?

  2. How can I communicate with you?


Name

bhms-mbbs-bds,4,biographies-and-history,1,child-health,21,cured-cases,1,disease-of-blood,3,disease-of-bone,9,disease-of-circulatory-system,6,disease-of-eye,3,disease-of-git,12,disease-of-head,6,disease-of-heart,2,disease-of-hepatobiliary-system,5,disease-of-kidney,6,disease-of-liver,4,disease-of-lungs,1,disease-of-mouth,4,disease-of-nervous-system,6,disease-of-rectum,5,disease-of-respiratory-system,1,disease-of-skin,8,female-health,24,food-and-nutrition,18,homeopathic-tips-tricks,19,homeopathy-article,43,homeopathy-education,6,homeopathy-remedy,5,homeopathy-tips,21,information-about-education,12,joints-disease,7,male-health,15,materia-medica,3,mental-health,1,nose-ear-and-throat,6,other-disease,6,psychological-disorder,5,question-and-answere,2,seasonal-disease,4,sensation-method,4,sexual-disease,8,sexual-health,13,ssc-dakhil-equivalent,3,urinary-tract-disease,5,viral-disease,6,weight-gain,1,weight-loss,4,
ltr
item
Alpha Homeo Care । হোমিওপ্যাথি : এনাল ফিসার, ফিস্টুলা, পাইলস এবং হোমিওপ্যাথি।
এনাল ফিসার, ফিস্টুলা, পাইলস এবং হোমিওপ্যাথি।
এনাল ফিসার, ফিস্টুলা, পাইলস এবং হোমিওপ্যাথি। মলদ্বারের রোগমলদ্বারের রোগ সমূহ বিভিন্ন কারনে হয়ে থাকে বিশেষ করে কোষ্ঠ্যকাঠিন্য প্রধান কারন।
https://blogger.googleusercontent.com/img/b/R29vZ2xl/AVvXsEgrWjAwDevHCjhSo3Z8bMI1JH9DmckMuHlM1CNwEpdNQClqPP4E8AGIKrMmTdkXgXtVsJPDrzgsEsBloiMxqCQ-t8mOCrMq5vKPlVFdI21dDKHYfHfdPxkrc2CCH5C22MN16nDCzYPLuX_-/w640-h486/anal-fissure-fistula-piles-and-homeopathy.jpg
https://blogger.googleusercontent.com/img/b/R29vZ2xl/AVvXsEgrWjAwDevHCjhSo3Z8bMI1JH9DmckMuHlM1CNwEpdNQClqPP4E8AGIKrMmTdkXgXtVsJPDrzgsEsBloiMxqCQ-t8mOCrMq5vKPlVFdI21dDKHYfHfdPxkrc2CCH5C22MN16nDCzYPLuX_-/s72-w640-c-h486/anal-fissure-fistula-piles-and-homeopathy.jpg
Alpha Homeo Care । হোমিওপ্যাথি
https://www.alphahomeocare.com/2014/03/ano-rectal-diseases-anal-fissure.html
https://www.alphahomeocare.com/
https://www.alphahomeocare.com/
https://www.alphahomeocare.com/2014/03/ano-rectal-diseases-anal-fissure.html
true
3552234064905339184
UTF-8
Loaded All Posts Not found any posts VIEW ALL Readmore Reply Cancel reply Delete By Home PAGES POSTS View All RECOMMENDED FOR YOU LABEL ARCHIVE SEARCH ALL POSTS Not found any post match with your request Back Home Sunday Monday Tuesday Wednesday Thursday Friday Saturday Sun Mon Tue Wed Thu Fri Sat January February March April May June July August September October November December Jan Feb Mar Apr May Jun Jul Aug Sep Oct Nov Dec just now 1 minute ago $$1$$ minutes ago 1 hour ago $$1$$ hours ago Yesterday $$1$$ days ago $$1$$ weeks ago more than 5 weeks ago Followers Follow THIS PREMIUM CONTENT IS LOCKED STEP 1: Share to a social network STEP 2: Click the link on your social network Copy All Code Select All Code All codes were copied to your clipboard Can not copy the codes / texts, please press [CTRL]+[C] (or CMD+C with Mac) to copy Table of Content