মূত্রনালীর সংক্রমণ হোমিওপ্যাথি চিকিৎসা। মূত্রনালীর সংক্রমণ একটি সাধারণ সমস্যা। প্রায় প্রত্যেকটি মানুষই কমবেশি মূত্রনালীর সংক্রমণ (UTI)এর সাথে পরিচিত।
মূত্রনালীর সংক্রমণ হোমিওপ্যাথি চিকিৎসা
মূত্রনালীর সংক্রমণ একটি সাধারণ সমস্যা। প্রায় প্রত্যেকটি মানুষই কমবেশি মূত্রনালীর সংক্রমণ (UTI)এর সাথে পরিচিত। এটি একটি ব্যাকটেরিয়াল সংক্রমণ যা মূত্রনালীর কোন অংশে বিস্তার করতে পারে। প্রস্রাবে বিভিন্ন তরল, লবণ, এবং বর্জ্য পদার্থের উপস্থিতি থাকলেও, সাধারণত এতে ব্যাকটেরিয়া থাকে না। যখন ব্যাকটেরিয়া প্রস্রাব থলি বা কিডনিতে প্রবেশ করে এটি খুব দ্রুত সংখ্যাবৃদ্ধি এবং মূত্রনালীর সংক্রমণ ঘটায়। মূত্রনালীর সংক্রমণের সবচেয়ে সাধারণ প্রকার হল মূত্রথলি সংক্রমণ যাকে সিস্টাইটিস(cystitis) বলা হয়। মূত্রনালী সংক্রমনের আরেকটি প্রকার হল কিডনি সংক্রমণ যা পায়েলোনেফ্রাইটিস নামে পরিচিত, এবং এটি অনেক গুরুতর হতে পারে।
যৌন সক্রিয় মহিলাদের মধ্যে মূত্রনালী সংক্রমন সবচেয়ে সাধারণ এবং সিকেল সেল রোগ ও বহুমূত্র (Diabetics) রোগীদের মধ্যে বেশী বিস্তার লাভ করে অথবা মূত্রনালীর বিকৃতির কারণেও এটি বেশী ঘটতে পারে।
যৌন সক্রিয় মহিলাদের মধ্যে মূত্রনালী সংক্রমন সবচেয়ে সাধারণ এবং সিকেল সেল রোগ ও বহুমূত্র (Diabetics) রোগীদের মধ্যে বেশী বিস্তার লাভ করে অথবা মূত্রনালীর বিকৃতির কারণেও এটি বেশী ঘটতে পারে।
মূত্রনালীর সংক্রমণ হোমিওপ্যাথি চিকিৎসা। |
ব্যাকটেরিয়া লিঙ্গমুখে প্রবেশ করে মূত্রনালীতে বিস্তার লাভ করতে পারে, নিম্নমানের টয়লেট অভ্যাস সংক্রমণের অনুকূল পরিবেশ তৈরী করে, কিন্তু অন্যান্য শর্তও (মহিলাদের গর্ভাবস্থায়, পুরুষদের প্রস্টেট পরিবর্ধন) গুরুত্বপূর্ণ এবং অনেক ক্ষেত্রে সংক্রমনের মূল কারণ অস্পষ্ট থাকে।
মূত্রনালীর সংক্রমণ কিডনি থেকে মূত্রনালী পর্যন্ত যেকোন স্থানে হতে পারে।
মূত্রনালীর বিস্তার নিম্নরুপ:
- Kidneys - কিডনি
- Ureters - প্রতিটি কিডনি থেকে প্রস্রাবথলি পর্যন্ত প্রস্রাব নিতে নালী
- Bladder - প্রস্রাবথলি
- Urethra - প্রস্রাবথলি থেকে বাইরে প্রস্রাব মুক্ত করার নালী।
কারণসমূহঃ
তরুণ (Acute) বা তীব্র মূত্রনালী সংক্রমণ -জীবাণু গঠিত কারণসমূহঃ
- ই-কোলাই (E. coli)
- স্টেফাইলোকক্কাই (Staphylococci)
- ক্লেবসিয়েলা (Klebsiella)
- ক্যানডিডা (Candida)
- প্রোটিয়াস (Proteus)
- এন্টেরোকক্কাই (Entrococci)।
অনুকূল কারণসমূহঃ
- স্ত্রীগণ (Female sex)
- প্রস্টেট বৃদ্ধি (Enlarged prostate)
- মূত্রথলির স্নায়ুতন্ত্রের অক্ষমতা
- ইউরিনারি ট্রাক্টে পাথর
- পলিসিস্টিক কিডনি রোগ (Polycystic kidney disease)
- ডায়াবেটিস মেলিটাস
- প্রস্রাব মূত্রথলী থেকে কিডনী দিকে প্রবাহমান (Vesico-ureteric reflux)
- ক্যাথেটার লাগানোর সময়।
মূত্রনালীর সংক্রমণ হোমিওপ্যাথি চিকিৎসা |
- ইউরিনারি বাঁধন (Urinary obstruction)
- প্রস্টেট বৃদ্ধি
- মূত্রনালি সরু (Stricture)
- পাথর
- প্রস্রাবথলির অক্ষমতা
- মূত্রথলির হার্নিয়া
- মূত্রথলির স্নায়ুতন্ত্রের অক্ষমতা
- প্রস্রাব মূত্রথলী থেকে কিডনী দিকে প্রবাহমান (Vesico-ureteric reflux)
- পলিসিস্টিক কিডনি রোগ (Polycystic kidney disease)
- ডায়াবেটিস মেলিটাস।
মূত্রনালী সংক্রমনের লক্ষণসমূহঃ
থলি সংক্রমণের লক্ষণঃ- বারবার প্রস্রাবের অনুভূতি থাকার পরও খুব সামান্য প্রস্রাব হতে পারে।
- ঘন ঘন মূত্রত্যাগ।
- রাত্রে প্রস্রাব (Nocturia): রাত্রিতে অবশ্যই প্রস্রাবের প্রয়োজন হয়।
- প্রস্রাবনালী প্রদাহ (Urethritis): মূত্রত্যাগের সময় মূত্রনালীতে সর্বত্র জ্বালা, অস্বস্তি ও ব্যথা থাকে।
- প্রস্রাবদ্বার থেকে পায়ু পর্যন্ত ব্যথা।
- প্রস্রাবে পুঁজ (Pyuria): মূত্রনালী থেকে প্রস্রাব অথবা স্রাব মধ্যে পুঁজ নিঃস্বরণ।
- রক্তপ্রস্রাব (Hematuria): মূত্রে রক্ত থাকে।
- হাল্কা জ্বর (Pyrexia): হালকা জ্বর থাকে।
- ঘোলাটে এবং দুর্গন্ধ যুক্ত প্রস্রাব।
- কিছু কিছু মূত্রনালীর সংক্রমণের লক্ষণ থাকে না।
- প্রস্রাবে প্রোটিন পাওয়া যায় ও ঘোলাটে থাকে।
- নোংরা বা ঝাঁঝালো গন্ধ থাকে।
- ঘন ঘন বা জরুরী প্রস্রাবের প্রয়োজন
- নিম্ন জ্বর
- ব্যথা বা জ্বলন থাকে
- বেদনাদায়ক যৌন মিলন
- তলপেটে ব্যথা ও চাপ বোধ থাকে
কিডনি সংক্রমণ উপসর্গঃ
- উপরোক্ত লক্ষণ সব।
- বমিবমি থাকবেই।
- পিছনে, পাশে অথবা কুঁচকিতে ব্যথা।
- পেটে ব্যথা বা চাপ।
- শরীরে শীত শীত ভাব এবং উচ্চ কম্পনসহ জ্বর থাকবে।
- রাতে অনেক ঘাম থাকবে।
- চরম ক্লান্তি. শরীরে শীত শীত ভাব এবং ঝাঁকুনি দিবে।
- ক্লান্তি
- ১০২ ডিগ্রী ফারেনহাইটের অধিক জ্বর, যা ২ দিনের বেশি স্থায়ী হয়।
- রাঙা, উষ্ণ, অথবা লালাভ চামড়া থাকে।
- সাধারণত অসুস্থ্যতা অনুভব হয়।
- মানসিক পরিবর্তন বা বিভ্রান্তি থাকে(বৃদ্ধদের ক্ষেত্রে)।
- বমিবমি ভাব ও বমি।
- সাংঘাতিক পেটে ব্যথা (কখনও কখনও)
প্রতিরোধঃ
- প্রচুর পরিমাণে তরল পানীয় অথবা পর্যাপ্ত পানি পান করতে হবে।
- মলমূত্র ত্যাগের পর যোনি থেকে পায়ু পর্যন্ত পর্যাপ্ত পানি দ্বারা ধৌত করতে হবে।
- যৌনমিলনের আগে ও পরে পানি পান করতে হবে যা এসময়ে প্রবেশকৃত ব্যাকটেরিয়া নির্মূল করতে সাহায্য করে।
- কনডমের উপর ব্যবহৃত রাসায়নিক পদার্থ জ্বালা সৃষ্টি করে সন্দেহ হলে কনডমের অন্য ব্র্যান্ড বা অন্য কোনো পদ্ধতি ব্যবহার করুন।
- আঁটসাঁট পোশাক এড়িয়ে চলুন এটা ব্যাকটেরিয়া বৃদ্ধি ত্বরান্বিত করতে পারে।
- তুলার আন্ডারওয়্যার পরেন। তুলা কম জ্বালাময় এবং নাইলনের চেয়ে বেশি বাতাস চলাচলের ব্যবস্থা করে।
জটিলতাঃ
- কিডনিতে পাথর
- উচ্চ রক্তচাপ
- ক্রনিক রেনাল ফেইলিউর
সাধারণ ব্যবস্থাপনাঃ
- পর্যাপ্ত বিশ্রাম নিতে হবে
- প্রচুর তরল খাবার অথবা পানি পান করতে হবে
- নিয়মিত মূত্রত্যাগ করাতে এবং কখনও মূত্র ধরে রাখা উচিত হবে না
- প্রস্রাবে ক্ষারত্ব বজায় রাখা
স্থানীয় স্বাস্থ্যবিধিঃ
- লবণ সীমিত খেতে হবে, যদি রক্তচাপ উচ্চ হয়।
- প্রোটিন সীমিত খেতে হবে, যদি রক্তে ইউরিয়া বেশী থাকে।
VERY NICE
আপনার মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ...