জন্ডিস এ হোমিওপ্যাথি চিকিৎসা।

জন্ডিস এ হোমিওপ্যাথি চিকিৎসা। রক্তে অস্বাভাবিক উপায়ে বাইল পিগমেন্ট, বিলিরুবিন ইত্যাদি বেড়ে যাওয়ার ফলে শরীরের ত্বক এবং চোখের সাদা অংশ হলদে হয়।

জন্ডিস এ হোমিওপ্যাথি চিকিৎসা


জন্ডিসঃ রক্তস্রোতে অস্বাভাবিক উপায়ে বাইল পিগমেন্ট, বিলিরুবিন ইত্যাদি বেড়ে যাওয়ার ফলে শরীরের ত্বক এবং চোখের সাদা অংশ হলদে বর্ণ ধারণ করলে তাকে জন্ডিস বলে।


জন্ডিস এ হোমিওপ্যাথি চিকিৎসা
জন্ডিস এ হোমিওপ্যাথি চিকিৎসা

জন্ডিস কিভাবে হয়ঃ

রক্তের প্রধান উপাধান হল স্বেত কণিকা, লোহিত কণিকা, অনুচক্রিকা এবং প্লাজমা রস। লোহিত কণিকা প্রাথমিকভাবে লিভার ও স্প্লীন থেকে এবং পরবর্তীতে হাড়ের মজ্জা থেকে উৎপন্ন হয়ে বেঁচে থাকে প্রায় ৩ মাস বা ১২০ দিন। সুস্থ পুরুষের ক্ষেত্রে প্রতি কিউবিক মিলিলিটার রক্তে গড়ে ৫৫০০০০০ টি এবং মহিলাদের ক্ষেত্রে ৪৫০০০০০ টি লোহিত কণিকা থাকে এবং প্রতি সেকেন্ডে প্রায় ২৪০০০০০ টি লোহিত কণিকা উৎপন্ন হয়। 

রক্ত স্রোতের মধ্যে বয়স্ক, ভেঙে যাওয়া, অস্বাভাবিক বা মরে যাওয়া লোহিত কণিকা অপসারিত হয়ে স্প্লীন, লিভার ও হাড়ের মজ্জার ভিতর জমা হয়। বিশেষ প্রক্রিয়ায় এই লোহিত কণিকার মূল উপাদান হিমোগ্লোবিন ভেঙে আয়রন বহনকারী প্রোটিন হেমাটিন অস্বাভাবিক বা গঠনগত ত্রুটির কারণে বাইল নিঃসরণের পথ অবরুদ্ধ হয়ে যায় তখন ইউরোবিলিনোজেন রক্তস্রোতের সাথে মিশে প্রস্রাবের সাথে নির্গত হয়। তখন প্রস্রাব হলদে দেখায়। 

রক্তে স্বাভাবিক অল্প পরিমাণ বিলিরুবিন থাকে যার মাত্রা ০.২-০.৮ মিলিগ্রাম। কিন্তু যখন রক্তে অতিরিক্ত বিলিরুবিন জমা হয় তখন আমরা তাকে জন্ডিস বলে থাকি।

লিভার সেলের প্রদাহের কারণে বা লিভারের অন্য অস্বাভাবিকতার কারণে পিত্ত নির্গমনে বাধা প্রাপ্ত হয়ে রক্তে চলে আসে।

অপরপক্ষে লিভারের বাইরে গলস্টোন বা টিউমারের কারণে হেপাটিক ডাক্ট বাধাপ্রাপ্ত হয়ে বিলিরুবিন রক্তে চলে আসে।

বাচ্চাদের ক্ষেত্রে যে জন্ডিস হয়, সেক্ষেত্রে ব্যাপক পরিমাণ লোহিত কণিকা ভেঙে গিয়ে প্রচুর বিলিরুবিন তৈরী হয় এবং রক্তে বিলিরুবিনের পরিমাণ বেড়ে যায় এটা অন্যান্যদের ক্ষেত্রে তেমন দেখা যায় না।

গিলবার্ট সিন্ড্রোমের ক্ষেত্রে রক্তে বিলিরুবিনের মাত্রা সামান্য বেড়ে যায় কিন্তু তা জন্ডিস হওয়ার জন্য পর্যাপ্ত নয় । আবার লিভার ফাংশন টেস্টে বিলিরুবিন বেশি দেখায় কিন্তু এক্ষেত্রে কোন লক্ষণও থাকে না সমস্যাও থাকে না।

জন্ডিস এর কারণঃ 

শিশুদের মধ্যেঃ
  • নবজাতকের জন্ডিস (শারীরিক জন্ডিস)
  • বুকের দুধ খাওয়ানো জন্ডিস
  • ভাইরাস জনিত যকৃতের প্রদাহ (হেপাটাইটিস এ, হেপাটাইটিস বি, হেপাটাইটিস সি, হেপাটাইটিস ডি, এবং হেপাটাইটিস ই)
  • হেমোলাইটিক রক্তস্বল্পতা
  • বিলিরুবিন বিপাকের জন্মগত ব্যাধি (গিলবার্ট সিন্ড্রোম)
  • অটোইমিউন যকৃতের প্রদাহ
  • ম্যালেরিয়া
প্রাপ্তবয়স্কদের মধ্যেঃ
  • পিত্ত নালীতে বাধা (সংক্রমণ, টিউমার বা পিত্তথলির পাথর দ্বারা)
  • ভাইরাস জনিত যকৃতের প্রদাহ (হেপাটাইটিস এ, হেপাটাইটিস বি, হেপাটাইটিস সি, হেপাটাইটিস ডি, এবং হেপাটাইটিস ই)
  • ওষুধ দ্বারা প্ররোচিত কোলেস্টেসিস (ওষুধের প্রভাবের কারণে পিত্তথলিতে পিত্ত পুল)
  • ওষুধ দ্বারা প্ররোচিত হেপাটাইটিস (এরিথ্রোমাইসিন, সালফা ড্রাগস, অ্যান্টিডিপ্রেসেন্টস, অ্যান্টি-ক্যান্সার ড্রাগস, রিফাম্পিসিন, স্টেরয়েড, ক্লোরপ্রোপামাইড, টলবুটামাইড, মুখের খাওয়া গর্ভনিরোধক, টেস্টোস্টেরনেল সহ ওষুধের দ্বারা উদ্ভূত যকৃতের প্রদাহ)
  • পিত্ত নালী সরু হলে
  • অ্যালকোহল জনিত যকৃতের রোগ (অ্যালকোহলিক সিরোসিস)
  • অগ্ন্যাশয় কার্সিনোমা (অগ্ন্যাশয়ের ক্যান্সার)
  • প্রাথমিক বিলিয়ারি সিরোসিস
  • ইস্কেমিক হেপাটোসেলুলার জন্ডিস (যকৃতে অপর্যাপ্ত রক্ত ও অক্সিজেন প্রবাহের কারণে জন্ডিস)
  • গর্ভাবস্থার ইন্ট্রাহেপ্যাটিক কোলেস্টেসিস (গর্ভাবস্থার সাথে পেটে চাপের কারণে পিত্তথলিতে পিত্ত পুল)
  • হেমোলাইটিক রক্তস্বল্পতা
  • বিলিরুবিন বিপাকের জন্মগত ব্যাধি
  • দীর্ঘস্থায়ী সক্রিয় যকৃতের প্রদাহ

কিভাবে বুঝবেন জন্ডিস হয়েছেঃ

  • চামড়া এবং চোখের সাদা অংশ হলুদ হয়ে যায়।
  • মুখের ভিতর (মিউকাস ঝিল্লি) হলুদ হয়ে যায়
  • প্রস্রাব গাঢ় হলুদ বর্ণের হয়।
  • ফ্যাকাশে মল
  • পেটে ব্যথা
  • যকৃত প্রদাহের কারণে ক্ষুদামন্দা, অরুচি, গা বমি বমি ভাব, বমি এবং জ্বর থাকতে পারে।
  • দুর্বলতা ও বিরক্তি ভাব দেখা দিতে পারে।
  • জন্ডিসের কারণের উপর ভিত্তি করে অন্যান্য লক্ষণসমূহ দেখা যায়।

রোগ নির্ণয়ঃ

সাধারণ পরিক্ষাঃ
  • স্কেলেরার (Sclera) উপরের অংশ
  • জিহ্বার নিচের অংশ
  • নখের গোড়ায়
  • আভ্যন্তরীণ মিউকাস মেমব্রেন এবং
  • গুরুতর অবস্থায় - মুখমন্ডল, চর্ম, বাম হাতের তালু প্রভৃতি জায়গায় হলদে ভাব আছে কিনা পরীক্ষা করতে হবে।

পরীক্ষাগারে রোগ নির্ণয়ঃ
  • সেরাম বিলিরুবিন- রক্তে সেরাম বিলিরুবিনের সাধারণ মাত্রা ০.২-০.৮ মিলিগ্রাম । ১০০ মিলিগ্রাম এ বিলিরুবিনের মাত্রা ৩ এর বেশি হলে ক্লিনিকাল জন্ডিস বলে এর কম হলে সুপ্ত জন্ডিস(Latent Jaundice) বলে।
  • আল্ট্রাসনোগ্রাম-এর মাধ্যমে লিভার, গলব্লাডার এবং বিলিয়ারী ট্রাক্টের মধ্যে গঠনগত কোন অস্বাভাবিকতা যেমন- টিউমার, ফোড়া, টিস্য বিকৃতি, যেমন- সিরোসিস, গলব্লাডার, পাথরের উপস্থিতি বা বাইল ডাক্ট অবরুদ্ধ হয়ে যাওয়া ইত্যাদি সম্পর্কে ধারনা পাওয়া।
  • সিটি স্ক্যানিং (CT Scanning)- এর মাধ্যমে চমৎকার প্রতিবিম্ব পাওয়া যায় এবং লিভারে টিউমার, ফেটি লিভার, লিভারে অন্যান্য পদার্থের উপস্থিতি ইত্যাদি সম্পর্কে পরিস্কার ধারনা পাওয়া যায়।
  • এম. আর. আই (MRI)- এর মাধ্যমেও লিভারের পরিস্কার ছবি পাওয়া যায় এবং রোগ নির্ণয় সহজতর হয়ে যায়।
  • এক্সরে- সাধারণ এক্সরে দিয়ে গলব্লাডারে পাথর আছে কিনা তা নির্ণয় করা যায়।

চিকিৎসাঃ

সাধারণ ব্যবস্থাপনাঃ
  • আরোগ্য হওয়ার পূর্বপর্যন্ত পূ্র্ণ বিস্রামে থাকতে হবে।
  • প্রচুর পরিমানে অনুত্তেজক তরল খাদ্য ও পানীয় পান করতে হবে।
  • জন্ডিস আক্রান্ত এলাকায় পানি ফুটিয়ে পান করতে হবে।
  • অতিরিক্ত মসল্লা, তৈলাক্ত খাদ্য এবং ভাজাভুজি পরিহার করতে হবে।
  • এ সময়ে মাছ, মাংস, ডিম, দুধ ইত্যাদি প্রোটিন জাতীয় খাদ্য নিয়ন্ত্রণ করতে হবে।
  • আখের রস, নিমপাতার রস, অড়হরের পাতার রস, করল্লা ইত্যাদি খুবই উপকারী।

ঔষধজ চিকিৎসাঃ
হোমিওপ্যাথিতে রোগ নয় রোগীর চিকিৎসাই মূল কথা, লক্ষণসমষ্টির সাথে সদৃশ ঔষধই রোগীর জন্য সুনির্বাচিত আরোগ্যের ঔষধ। জন্ডিস এ হোমিওপ্যাথি চিকিৎসা সঠিকভাবে করানোর জন্য অবশ্যই একজন দক্ষ ও যোগ্যতা সম্পন্ন হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসকের শরনাপন্ন হওয়া উচিত। জন্ডিস এ হোমিওপ্যাথি চিকিৎসায় বিভিন্ন মেটেরিয়া মেডিকা, সিন্থেসিস রেপার্টরী এবং রবিন মার্ফির রেপার্টরীতে জন্ডিস আরোগ্যের ক্ষেত্রে ব্যবহৃত ঔষধগুলো নিম্নরুপ-

একোনাইট, আর্সেনিক এল্ব, বেলাডোনা, ব্রায়োনিয়া, কার্বভেজ, কার্ডোয়াস মেরিনাস, সিয়ানেন্থাস, চেলিডোনিয়াম, চাইনা, কোনিয়াম, ক্রোটেলাস হরিদাস, ডলিকস, লাইকোপডিয়াম, মাইরিকা, মার্ক সল, ন্যাট্রাম সালফ, নাইট্রিক এসিড, নাক্স ভম, ফসফরাস, পডোফাইলাম, প্লাম্বাম, পালসেটিলা, সেপিয়া, সাইলিসিয়া, সালফার ইত্যাদি।

জন্ডিস এ হোমিওপ্যাথি চিকিৎসা
জন্ডিস এ হোমিওপ্যাথি চিকিৎসা

জন্ডিসের ফলে জটিলতাঃ

জন্ডিস একটি লক্ষণ যা অনেকগুলো রোগের প্রতিনিধি হিসেবে দেখা দেয় যেমন- গলব্লাডারে পাথরে, বাইল ডাক্ট অবরুদ্ধ হয়ে যাওয়া, প্যানক্রিয়াসের ক্যান্সার ইত্যাদি। এজন্য বিভিন্ন পরীক্ষার মাধ্যমে রোগের কারণ অনুসন্ধানপূর্বক সঠিক চিকিৎসা হওয়া প্রয়োজন অন্যথায় অনেক জটিলতা দেখা দিতে পারে। যেমন- লিভার সিরোসিস, প্রোটাইটিস (সেরিব্রাল হেমোরেজ, ব্রেইন ড্যামেজ, বধিরতা, আংশিক পক্ষাঘাত, সেপ্টিসেমিয়া এমনকি মৃত্যুও হতে পারে।

কৃতজ্ঞতা স্বীকারঃ ডাঃ হাসানুজ্জামান

COMMENTS

BLOGGER: 1
Name

bhms-mbbs-bds,4,biographies-and-history,1,child-health,21,cured-cases,1,disease-of-blood,3,disease-of-bone,9,disease-of-circulatory-system,6,disease-of-eye,3,disease-of-git,12,disease-of-head,6,disease-of-heart,2,disease-of-hepatobiliary-system,5,disease-of-kidney,6,disease-of-liver,4,disease-of-lungs,1,disease-of-mouth,4,disease-of-nervous-system,6,disease-of-rectum,5,disease-of-respiratory-system,1,disease-of-skin,8,female-health,24,food-and-nutrition,18,homeopathic-tips-tricks,19,homeopathy-article,43,homeopathy-education,6,homeopathy-remedy,5,homeopathy-tips,21,information-about-education,12,joints-disease,7,male-health,15,materia-medica,3,mental-health,1,nose-ear-and-throat,6,other-disease,6,psychological-disorder,5,question-and-answere,2,seasonal-disease,4,sensation-method,4,sexual-disease,8,sexual-health,13,ssc-dakhil-equivalent,3,urinary-tract-disease,5,viral-disease,6,weight-gain,1,weight-loss,4,
ltr
item
Alpha Homeo Care । হোমিওপ্যাথি : জন্ডিস এ হোমিওপ্যাথি চিকিৎসা।
জন্ডিস এ হোমিওপ্যাথি চিকিৎসা।
জন্ডিস এ হোমিওপ্যাথি চিকিৎসা। রক্তে অস্বাভাবিক উপায়ে বাইল পিগমেন্ট, বিলিরুবিন ইত্যাদি বেড়ে যাওয়ার ফলে শরীরের ত্বক এবং চোখের সাদা অংশ হলদে হয়।
https://blogger.googleusercontent.com/img/b/R29vZ2xl/AVvXsEi0gzCZ-0FhCcWNX_1sk2NU1ZUCxzqoosK2yEUHQPsNhQ1y8fCmgvkn25B8lsns_NTY6XGk7ONE9j13DoY9kkTFGq2dALLCg3T691jaPSHXnv5MIaN9xtf3G3ZPRL5X7QmKyvhubww_YRBc4oMoruQcAX8dJhLls6RqAJ5FCNmI86MRAxPzCF-8pq05vmhT/w640-h426/%E0%A6%9C%E0%A6%A8%E0%A7%8D%E0%A6%A1%E0%A6%BF%E0%A6%B8%20%E0%A6%B0%E0%A7%8B%E0%A6%97%E0%A7%87%20%E0%A6%B9%E0%A7%8B%E0%A6%AE%E0%A6%BF%E0%A6%93%E0%A6%AA%E0%A7%8D%E0%A6%AF%E0%A6%BE%E0%A6%A5%E0%A6%BF%20%E0%A6%9A%E0%A6%BF%E0%A6%95%E0%A6%BF%E0%A7%8E%E0%A6%B8%E0%A6%BE.jpeg
https://blogger.googleusercontent.com/img/b/R29vZ2xl/AVvXsEi0gzCZ-0FhCcWNX_1sk2NU1ZUCxzqoosK2yEUHQPsNhQ1y8fCmgvkn25B8lsns_NTY6XGk7ONE9j13DoY9kkTFGq2dALLCg3T691jaPSHXnv5MIaN9xtf3G3ZPRL5X7QmKyvhubww_YRBc4oMoruQcAX8dJhLls6RqAJ5FCNmI86MRAxPzCF-8pq05vmhT/s72-w640-c-h426/%E0%A6%9C%E0%A6%A8%E0%A7%8D%E0%A6%A1%E0%A6%BF%E0%A6%B8%20%E0%A6%B0%E0%A7%8B%E0%A6%97%E0%A7%87%20%E0%A6%B9%E0%A7%8B%E0%A6%AE%E0%A6%BF%E0%A6%93%E0%A6%AA%E0%A7%8D%E0%A6%AF%E0%A6%BE%E0%A6%A5%E0%A6%BF%20%E0%A6%9A%E0%A6%BF%E0%A6%95%E0%A6%BF%E0%A7%8E%E0%A6%B8%E0%A6%BE.jpeg
Alpha Homeo Care । হোমিওপ্যাথি
https://www.alphahomeocare.com/2013/06/blog-post_20.html
https://www.alphahomeocare.com/
https://www.alphahomeocare.com/
https://www.alphahomeocare.com/2013/06/blog-post_20.html
true
3552234064905339184
UTF-8
Loaded All Posts Not found any posts VIEW ALL Readmore Reply Cancel reply Delete By Home PAGES POSTS View All RECOMMENDED FOR YOU LABEL ARCHIVE SEARCH ALL POSTS Not found any post match with your request Back Home Sunday Monday Tuesday Wednesday Thursday Friday Saturday Sun Mon Tue Wed Thu Fri Sat January February March April May June July August September October November December Jan Feb Mar Apr May Jun Jul Aug Sep Oct Nov Dec just now 1 minute ago $$1$$ minutes ago 1 hour ago $$1$$ hours ago Yesterday $$1$$ days ago $$1$$ weeks ago more than 5 weeks ago Followers Follow THIS PREMIUM CONTENT IS LOCKED STEP 1: Share to a social network STEP 2: Click the link on your social network Copy All Code Select All Code All codes were copied to your clipboard Can not copy the codes / texts, please press [CTRL]+[C] (or CMD+C with Mac) to copy Table of Content